সফল পিতা মোহাম্মদ আব্দুছ ছালাম

জনাব আব্দুছ ছালামের নিজস্ব একটি সুন্দর পরিচয় থাকলেও আমি তাঁকে “সিদরাতুসের আব্বু” ভাবতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। কিন্তু প্রশ্ন হলো—কে এই সিদরাতুস? কেনইবা মেয়েকে দিয়ে তাঁর বাবাকে চিনতে হবে?
একটু পরিষ্কার করেই বলি। সিদরাতুসের পূর্ণ নাম সিদরাতুস সালাম। বর্তমানে সে ফেনি গার্লস ক্যাডেট কলেজের দশম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। ২০২২ সালের ক্যাডেট কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সিলেট বিভাগ থেকে মাত্র দু’জন মেয়ে শিক্ষার্থী ক্যাডেট কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিল। তাঁদের একজন হলো সিদরাতুস সালাম। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এমন সন্তানের পিতা হতে পারা সত্যিই আনন্দের এবং গর্বের বিষয়। আমাদের জনাব আব্দুছ ছালাম সেই গর্বিত পিতা—একজন সফল বাবা।
মোহাম্মদ আব্দুছ ছালাম ১৯৭৬ সালের ২৩ মার্চ সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার গঙ্গাজল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরহুম আহমদ আলী (কুটন হাজী) এবং মাতা আঙ্গুরুন নেছা। ৬ ভাই ও ১ বোনের মধ্যে তিনি ষষ্ঠ । তাঁর বড় ভাই সফল শিক্ষক মোঃ আব্দুল খালিকসহ সবাই শিক্ষকতায় নিয়োজিত থাকলেও তিনি হয়তো ভাইদের পেশায় বৈচিত্র্য আনতে ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হওয়াকেই শ্রেয় মনে করেছেন। বর্তমানে তিনি ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার উত্তর কুশিয়ারা ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন। এর আগে তিনি জকিগঞ্জ উপজেলার হাজীগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হলেও যোগদান করেননি।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অর্থনীতিতে বিএসএস (অনার্স) ও এমএসএস সম্পন্ন করা আব্দুছ ছালামের স্ত্রী ফাতিমা জাফরিন চৌধুরী একজন উচ্চশিক্ষিত ও গুণবতী নারী। তিনি সিলেট নগরীর আম্বরখানা দরগাগেইট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
আব্দুছ ছালাম দম্পতির তিন কন্যার মধ্যে দ্বিতীয় কন্যা সিদরাতুল মুনতাহা জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট ইংলিশ স্কুলের নবম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত এবং তৃতীয় কন্যা সিদরাতুল জান্নাহ স্কলার্স হোম, পাঠানটুলা ক্যাম্পাসে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ছে।
জীবনের এত সাফল্যের পেছনে কারো বিশেষ অবদান আছে কি না জানতে চাইলে জনাব ছালাম বলেন—
“ক্লাস টুতে পড়াকালীন আমি বাবাকে হারাই। সাত ভাইবোন নিয়ে মা যখন দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন, তখন আলোকবর্তিকার মতো এগিয়ে আসেন আমার দুই বড় ভাই—আব্দুল খালিক ও আব্দুল মালিক। খালিক ভাই বাড়িতে থেকে আমাদের যথাযথ দিকনির্দেশনা দিয়েছেন এবং মালিক ভাই বিদেশে থেকে আর্থিক সহায়তা দিয়ে পরিবারকে সচল রেখেছেন। আমার জীবনের সাফল্যের নব্বই ভাগ কৃতিত্ব তাঁদের দু’জনের, আমার নিজের চেষ্টা মাত্র দশ ভাগ।”
সব মিলিয়ে আমরা জনাব মোহাম্মদ আব্দুছ ছালামকে জীবনসংগ্রামে একজন সফল মানুষ হিসেবেই দেখি। তিনি একজন সফল কর্মকর্তা, সফল স্বামী ও সফল পিতা। আমরা তাঁর সুস্থ ও নীরোগ জীবন কামনা করি।